দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : কেউ খৈনি মলছেন, কেউ আবার রাস্তার পাশে বাইক দাঁড় করিয়ে মোবাইলে কথা বলতে ব্যস্ত, কেউ আবার গরম চায়ের আমেজ নিচ্ছেন খোশগল্পের সাথে, কারোর গলায় রুমাল, কারো আবার গামছা, সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে কেউ মুখে দিচ্ছেন শাড়ির আঁচল, কেউ গলায় ঝোলানো রুমাল তুলছেন মুখে এ। ছবি কোন শহরতলী বা গ্রামাঞ্চলের নয়, এই ছবি খোঁদ সোনামুখীর শহরের।
ইতিমধ্যেই জেলায় করোনা সংক্রমণ পাচশো পেরিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সোনামুখী পাশের ব্লক এলাকা পাত্রসায়েরে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। জেলাজুড়ে বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণ রুখতে জারি হয়েছে সরকারিভাবে আড়াই দিনের লকডাউন। কড়া পুলিশি ব্যবস্থা করা হবে জেলার পৌরসভার গুলিতে এমনটাই জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন। কিন্তু যে চিত্র উঠে এল,যা তার ঠিক উল্টো পুরান।
বাঁকুড়া শহরে যেখানে বেলা ১১ টা থেকেই আঁটোসাঁটো পুলিশি বন্দোবস্তে মুঠে ফেলা হয়েছে শহরকে। সেখানেই সোনামুখী শহরে পুলিশের দেখা মিলল না বেলা ১১ টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও। কেউ কেউ ক্যামেরা দেখে মুখে মাক্স চড়ালেও, কেউ কেউ আবার ডোন্ট কেয়ার।এমন ভাবখানা সরকারি নির্দেশিকা চুলোয় যাক, আমরা এখন ছুটির মেজাজে। এমনটাই হাবভাব অবিবেচক কিছু মানুষের।
কারো কারো হুশ ফিরেছে ক্যমেরা দেখে। কেউ মুখে মাক্স,কেউ মুখে দিয়েছেন শাড়ির আঁচল, কেউ আবার রুমাল টেনে নিয়েছেন মুখে। এমন চিত্র ধরা পরল মুদিখানার দোকান থেকে ফলের দোকান সর্বত্রই। পাশাপাশি গাদাগাদি করে দাড়িয়ে সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করেই বাজার করতে দেখা গেল আমজনতাকে। প্রশ্নের উত্তরে দাবি, পাশেই বাড়ি তাই পরিনি, দুটো জিনিস কিনে নিয়ে চলে যাচ্ছি, কেউ আবার বলছে গরমে মুখে রাখা যাচ্ছে না মাক্স, মুখ ভেঁপে যাচ্ছে তাই পড়িনি।
তবে করোনা সংক্রমন বেড়ে চলেছে এটা চিন্তার ব্যাপার সকলেই জানেন। কিন্তু জনগণ এখন জ্ঞানপাপী, তাই হাল ধরতে হয় পুলিশকেই। কিন্তু সেই পুলিশের দেখা মিলল না বেলা ১১ টার পরও। গুটিকতক ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় থাকলেও তোয়াক্কা করছে কে !
শহরের প্রবেশের মুখে কড়াকড়ি আর শহরের বুকে এই চিত্র ধরা পড়ল। এ যেনো বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো। শহরের বাইরে চলছে পুলিশি টহল। ক্যাম্প করে চলছে নাকা চেকিং। উপযুক্ত কাগজপত্র না দেখালে শহরে প্রবেশের অনুমতি মিলছে না। কিন্তু শহরের ভেতরে চিত্র ঠিক উল্টো। শহরে ক্যামেরা ঘুরছে খবর পেয়ে অবশেষে দেখা মিললো পুলিশের। বেরিয়ে এলো পুলিশবাহিনী। দোকানের শাটার বন্ধ করা হলো। কয়েকজন মানুষকে পড়তে হলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।এদের মধ্যেই কেউ কারোনায় আক্রান্ত কি না কেউ জানেনা। আগামী দিনের সোনামুখী শহরে বাড়তে পরে করোনার গ্রাফ্। আর তার জন্য দায়ী থাকবেন অবিবেচক মানুষ থেকে পুলিশ প্রশাসন সকলেই।